সুনামগঞ্জ , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা তুমি যে চেয়ে আছ আকাশ ভরে দুই দিনের রিমান্ডে ব্যারিস্টার সুমন দিরাই আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা ধর্মপাশা কৃষি ঋণ কমিটির সভা এসএসসি’র টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করায় ছাত্রীর আত্মহত্যা জাউয়াবাজারে কৃষক দলের কমিটি গঠন ছাতকে গৃহবধূর আত্মহত্যা জনগণ যাতে সকল ক্ষমতার মালিক হতে পারেন তেমন দেশ গড়তে চাই : প্রধান উপদেষ্টা ধোপাজান-চলতি নদী : পথ বদলে চলছে বালু-পাথর লুট জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা : শুনানি শেষ, রায় যে কোনো দিন অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা দেবে স্পেন পথনাটক উৎসব উদ্বোধন জামালগঞ্জ উপজেলা জমিয়তের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস পলাশ ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ কারাগারে মুজিববর্ষ উদযাপনে খরচ ১২৬১ কোটি টাকা পুলিশের নতুন আইজিপি বাহারুল আলম লাখে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় শিক্ষা কর্মকর্তাকে

দীর্ঘায়িত হচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

  • আপলোড সময় : ০৫-১০-২০২৪ ০৮:৪১:২২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৫-১০-২০২৪ ০৮:৪১:২২ পূর্বাহ্ন
দীর্ঘায়িত হচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রা হয়েছে ৩৪ হাজার ৪৩৮ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৭৭ জন। সাধারণত গ্রীষ্মকালে ডেঙ্গু রোগের মৌসুম হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে বছরজুড়েই ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডেঙ্গু ভাইরাসবাহিত মশা শীত-গ্রীষ্ম মানছে না। বছরব্যাপী প্রজনন এবং বংশবিস্তার করছে। এসব কারণেই দেশে এখন ডেঙ্গু সংক্রমণ সারা বছর ধরেই চলছে। অতীতে শহরের বাসা-বাড়িতে আবাসিক ধরনের মশা (এডিস ইজিপটাই) ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটালেও বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের বুনো মশাও (এডিস এলবোপিকটাস) ডেক্সগুর বাহক হিসেবে কাজ করছে। গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটলেও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করায় ডেঙ্গু ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১০৫৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের, ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে তিনজনের, মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের, এপ্রিলে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। মে মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের, জুন মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে আটজনের, জুলাই মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২৬৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের, আগস্ট মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫২১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। সেপ্টেম্বর মাসে ১৮ হাজার ৯৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসেও বেশি থাকবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেও মোটামুটি ডেঙ্গুর সংক্রমণ থাকবে। এবছরের ডেঙ্গুর প্রকোপ আগামী বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত চলবে। অপরদিকে বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুরোগের ঝুঁকিও বাড়ছে। থেমে থেমে বৃষ্টি ও উচ্চ আর্দ্রতা ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস মশার প্রজননের জন্য খুবই উপযোগী। এ ধরনের আবহাওয়া তাদের কামড়ানোর প্রবণতাও বাড়িয়ে দেয়। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বছরের এ সময়ে বৃষ্টিপাতের পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আসা মৌসুমী বায়ু। এর ফলে গত দুই দিন ধরে থেকে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বৃষ্টির এ প্রবণতা সপ্তাহজুড়েই অব্যাহত থাকতে পারে। চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দীর্ঘায়িত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং হেলথ অ্যান্ড হোপ ¯েপশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গু বাড়বে এরকম পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল। এবার বর্ষা একটু দেরিতে শুরু হয়েছে, তাই ডেঙ্গুর প্রকোপও শুরু হয়েছে দেরিতে। আমরা ভয় পাচ্ছি যে, এবার ডেঙ্গুর মৌসুম দীর্ঘায়িত হবে। ডেঙ্গু যে হারে বাড়ছে, সেটা বিপজ্জনক। এডিস মশা প্রজননের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হলে গেলে ডেঙ্গু বাড়বে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) বর্তমান উপদেষ্টা এবং সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক ডা. মো. মুশতাক হোসেন বলেন, বৃষ্টি এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রা অবশ্যই ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়াবে। বৃষ্টি কমে যাওয়ার পরেও মশা এবং ভাইরাসের জীবনচক্র আরও এক থেকে দুই মাস থাকে। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে, থামার পর হয়ত আমরা বলতে পারবো দুই মাস পর ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যাবে। সুতরাং চলতি মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ডেঙ্গুর মৌসুম দীর্ঘায়িত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, এ বছর ডেঙ্গুর মৌসুম দীর্ঘায়িত হবেই। আমরা যে ফরকাস্টিং তৈরি করি, সেখানে এডিস মশার ঘনত্ব, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা মিলিয়ে করি। সেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু থাকবে। অক্টোবর এবং নভেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভালো আকারেই থাকবে। এই প্রকোপ আগামী বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত চলবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ দুই যুগেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কোনো পরিকল্পনা গড়ে ওঠেনি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিকদের সমন্বয়ে সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। সকলের সমন্বিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সামনের দিনগুলোতে বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স